ডিজিটাল মার্কেটিংঃ
ডিজিটাল মার্কেটিং কি- এককথায় বলতে গেলে কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের মার্কেটিং ডিজিটাল প্লাটফর্মে করাকেই ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হয়। আমরা অফলাইনে বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের যে মার্কেটিং দেখে থাকি সেইম একই কাজ অনলাইনে করা হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। আশা করি আপনাদের সবারই এই অফলাইন মার্কেটিং সম্পর্কে বেশ ভালো আইডিয়া আছে, কিন্তু অনলাইন মার্কেটিং টা এত সহজে বুঝবেন না। আমি আপনাদের সুবিধার্থে খুব সুন্দর করে সহজভাবে এখন পুরো বিষয়টা বুঝিয়ে বলব, যেহেতু আমি নিজে একজন ডিজিটাল মার্কেটার।
বর্তমান সময় হল ডিজিটাল প্রযুক্তির সময়। সবধরনের কাজকর্ম এখন ডিজিটাল ভাবেই হচ্ছে। ঠিক তেমনি বড়-বড় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি গুলো তাদের পণ্য প্রচারণার ক্ষেত্রে অনলাইন প্রচারণাকে ব্যবহার করছে। এছাড়া অন্যান্য মার্কেটিং মেথড এর ছেয়ে ডিজিটাল মেথড গুলো ১০গুণ বেশি ফলাফল দেয়। তাই, বেশিরভাগ প্রচারণা এখন অনলাইন মাধ্যমেই হচ্ছে। অন্যদিকে ক্যারিয়ার হিসেবে অনেক প্রফেশনাল একটি পেশা হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উটেছে।
যারা ডিজিটাল মার্কেটিং এ কাজ করে তাদেরকে ডিজিটাল মার্কেটার বলা হয়। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা ব্যপক আকারে বেড়ে গিয়েছে। এই সম্পর্কে যদি আপনার স্পষ্ট ধারণা না থাকে তাহলে এই কম্পিটিটিভ ওয়ার্ল্ডে টিকতে পারবেন না। প্রত্যেকটি বিজনেসের জন্য অনলাইনে আসা একেবারে অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে। অফলাইনে যারা মার্কেটিং করছে তাদের তুলনায় অনলাইন মার্কেটাররা একটি বিজনেস কে খুব দ্রুত প্রসারিত করতে পারছে।
আপনি যদি একজন বিজনেজ ওনার হন অথবা একজন মার্কেটার হন এই বিষয়টি জানা আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া প্রতিটি মানুষেরই ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা এবং এই বিষয়ে নূন্যতম ব্যাসিক দক্ষতাটুকু থাকা প্রয়োজন। কেননা, আপনি যদি চাকরির কথাও চিন্তা করেন, বর্তমানে অফলাইন প্রসেস থেকে অনলাইন নিয়োগ প্রসেসকেই প্রায় সব কোম্পানি বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। তাহলে চলুন বিস্তারিত জেনে নিই
ডিজিটাল মার্কেটিং কি?
| ডিজিটাল মার্কেটিং কি |
একটি ব্যবসার সফলতা পুরোপুরিভাবে নির্ভর করে তার মার্কেটিং এর উপর। মার্কেটিং বলতে সাধারণত আমরা কোন পণ্য বা সার্ভিসের প্রচার প্রচারণাকেই বুঝি। কিন্তু না, এর অর্থ আরো অনেক গভীর। শুধুমাত্র প্রচার প্রচারণা দিয়েই মার্কেটিং এর প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যায় না। একটু ভাবুন, আমি আপনার কাছে আমার পণ্যের প্রচার করলাম, কিন্তু আমার এই পণ্য আপনি নিবেন না, আপনার কোন প্রয়োজন নেই। তাহলে এই মার্কেটিং কি আমার জন্য কোনভাবে লাভজনক হবে? কখনো না। সহজ কথায়, মার্কেটিং হলো ক্রেতার মন জয় করে তার কাছে কোন পণ্য বিক্রি করা। এবার আসুন ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে বুঝার চেষ্টা করি,
যেহেতু বিষয়টা একটু জটিল, আমি উদাহরণের মাধ্যমে আপনাকে স্পষ্টভাবে বুঝাবো। ধরুন, আপনার একটি মোবাইল ফোনের দোকান আছে, তার পাশেই আপনার বন্ধুরও একটি মোবাইলের দোকান। তাহলে, আপনাদের দুজনের বিজনেসের মধ্যে সবসময় একটা কম্পিটিশন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এখন, আপনার বন্ধু ফেসবুকে একটি পেইজ খুলল তার দোকানের নামে এবং তার যত কাস্টমার আছে সবাইকে ওই পেজে এনগেইজ করে ফেলল, পাশাপাশি আপনার এলাকার যত মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে সবাই আস্তে আস্তে তার পেইজ ফলো করতে লাগল। আপনি দেখলেন হুট করে আপনার দোকানের কাস্টমার কমে গেল, যারা আপনার দোকানে আসত তারাও আপনার বন্ধুর দোকানে চলে যাচ্ছে। তাহলে এখানে ঘটনাটা কি ঘটল, ভাবুন
খুব সিম্পল ব্যপার, আপনার এলাকার অধিকাংশ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। আপনার বন্ধুর বিজনেসের অনলাইন প্রেজেন্স থাকায় তার দোকানে নতুন কোন মোবাইল ফোন আসার সাথে সাথে ফেসবুক পেজে ছবি আপলোড করে দেয় এবং তার পেজের ফলোয়াররা খুব সহজে জানতে পারে। এদিকে আপনার অনলাইনে কোন এক্টিভিটি নাই। আপনার দোকানে তার থেকে ভালো পণ্য নিয়ে আসলেও আপনার কাস্টমার রা এত তাড়াতাড়ি কোন আপডেট পাচ্ছে না। তাহলে আপনি আপনার বন্ধুর সাথে কম্পিটিশনে টিকে থাকতে পারবেন?
তো এভাবেই, প্রতিটি বিজনেসের অনলাইন প্রেজেন্স এর গুরুত্ব অপরিহার্য হয়ে গেছে। অফলাইনে যেমন কাস্টমার পাওয়ার জন্য আপনাকে মার্কেটিং করতে হয়েছে, একইভাবে অনলাইনেও মার্কেটিং করা প্রয়োজন। আপনার বন্ধুর পেজটি এতদিনে সবাই চিনে গেছে, আর আপনি নতুন একটি পেজ নিয়ে এসেছেন। আপনার বন্ধুর পেজ থেকেই তারা পণ্য কিনবে, আপনার পেজে আসার আর কোন প্রয়োজন তাদের নেই। আপনি যে আপনার বন্ধুর থেকে ভালো সার্ভিস দিচ্ছেন, তা তো আপনার অডিয়েন্সদের বুঝাতে হবে, তাদের কাছে আপনার পেজটি রিচ করতে হবে। তাহলে বুঝতেই পারছেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর ধারণা কিভাবে এসেছে। আপনার কনসেপ্ট আরো ক্লিয়ার করতে নিজে নিজে একটু ভাবুন।
অফলাইনে যেমন দেখেন, জনসমাগম বেশি আছে এমন জাগায় ৫০০টাকার একটা ব্যানার লাগিয়ে দিলে ওই জাগায় যত লোক আসবে সবার কাছে আপনার বিজনেস পরিচিত হয়ে যাবে। অনলাইনে কিন্তু বিষয়টা এরকম সহজ না। আবার ধরুন, আপনার বিজনেসের সব কাস্টমার মহিলা, যেখানে অধিকাংশ মহিলারাই বাইরে আসে না, তাদের জন্য আপনার ভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে হয়। এক্ষেত্রে অনলাইন মার্কেটিং আপনাকে বেশি সুবিধা দিবে। আপনার ধারণা যখন আরো স্পষ্ট হবে তখন বুঝতে পারবেন অফলাইন মার্কেটিং এর তুলনায় অনলাইন মার্কেটিং অনেক বেশি ফলপ্রসূ এবং আপনার মার্কেটিং কস্ট তুলনামুলকভাবে কম।
অনলাইন প্রচারণা কেন গুরুত্বপূর্ণঃ
একসময় ছিল যখন বাজারে নতুন কোন পণ্য আসলে তাদের কিছু কর্মী ঘরে ঘরে গিয়ে সেই পণ্য সম্পূর্ন সবাইকে জানিয়ে দিত এবং তাদেরকে কেনার আকৃষ্ট করত। বর্তমানে সেই প্রচারণা গুলো অনলাইনে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব সহজেই করা যাচ্ছে। গ্রাহকের কাছে পণ্যের গুণাগুণ, প্রয়োজনীয়তা সবকিছুই সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যাচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে।
এছাড়া বর্তমান সময়ে ৪০০ কোটির বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতেছে এবং এই ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তাহলে আপনি একবার ভেবে দেখুন আপনার ব্যবসার বা পণ্যের মার্কেটিং টা যদি অনলাইনে করেন তাহলে কি পরিমান কাস্টমার আপনি পেতে পারেন। এজন্য প্রতিটা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অনলাইন প্রচারণা গুরুত্বপূর্ণ।
ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে করবেন?
ডিজিটাল পদ্ধতিতে মার্কেটিং করার অনেক মেথড আছে। আপনার ব্যবসায়ের জন্য কোন মেথডটা বেশি কার্যকর, আপনার পণ্যটি কোন মেথডে সহজে গ্রাহকের কাছে পৌছাতে পারবেন তা আপনাকে খুজে বের করতে হবে। এরপর আপনাকে সেই মেথডেই মার্কেটিং করতে হবে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্র গুলো সম্পর্কে সহজে আলোচনা করার জন্য আমি এগুলোকে ৮টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছি। চলুন দেখে নেয়া যাক-
- Search Engine Optimization
- Search Engine Merketing
- Social Media Merketing
- Affiliate Merketing
- Content Merketing
- Email Merketing
- Pay Per Click Advertising (PPC)
- Cost Per Action Marketing (CPA Marketing)
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রগুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যাকঃ
ডিজিটাল মার্কেটিং একক কোন বিষয় নয়। এর সাথে জড়িয়ে আছে মার্কেটিং জগতের এর সামগ্রিক বিষয়। আমরা যেমন অফলাইন মার্কেটিং দেখি অনলাইনেও ঠিক একইভাবে মার্কেটিং করতে হয়, কিন্তু স্ট্র্যাটেজি সম্পূর্ণ ভিন্ন।
Search Engine Optimization :
সার্চ
ইঞ্জিন
অপ্টিমাইজেশান বা SEO 
Search Engine Optimization এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল SEO. (SEO) হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এসইও এর মানে হলো, সার্চ ইঞ্জিনের গাইডলাইন ফলো করে আপনার সাইটের কন্টেন্ট সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি করে তৈরি করা। ধরুন আপনার আপনার সার্ভিস বা প্রোডাক্ট যদি আপনার কাস্টমার রা সার্চ করে খুঁজে না পায়, তাহলে আপনি কখনোই সফল হতে পারবেন না।
এখন আপনার সাইটটি যদি সার্চইজ্ঞিন এর প্রথমে না থাকে তাহলে আপনি কখনো ভিজিটর পাবেন না। আর ভিজিটর নেই মানে আপনার বিক্রি নেই। আপনার বিজনেসের জন্য নতুন কাস্টমার বা বিজনেসের ব্র্যান্ডিং করার জন্য এসইও এর বিকল্প নেই। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি এবং দীর্ঘস্থায়ী টেকনিক। এজন্য আপনার ওয়েবসাইট বা প্রোডাক্ট পেইজ গুলোকে এসইও করা প্রয়োজন এবং গুরুত্বপূর্ণ।
Search Engine Marketing (SEM) :
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা SEM এর মানে হলো বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজে এড দেয়া। ধরুন, আপনার বিজনেসের অডিয়েন্স আপনার সাইট খুঁজে পেতে যেসব কিওয়ার্ড ব্যবহার করে সেসব কিওয়ার্ডের জন্য আপনার সাইটের অবস্থান অনেক নিচের দিকে। আমরা জানি যে, সার্চ রেজাল্টের প্রথম ৩টির পরে আর কেও ক্লিক করে না, দেখতেও চায় না। তাহলে আপনি কোনভাবে আপনার সাইটে কোন ভিজিটর পাবেন না।
কাস্টমাররা আপনার বিজনেস রিলেটেড যেসব কিওয়ার্ড ব্যবহার করে সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে সেসব কিওয়ার্ডের জন্য আপনার সাইটকে সার্চ রেজাল্টের প্রথম অবস্থানে দেখানোর জন্য এড দেয়া হলো সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং। কিওয়ার্ড বাছাই এবং কোন কিওয়ার্ডের জন্য প্রতি ক্লিকে আপনাকে কত পেমেন্ট করতে হবে এগুলো জানতে হলে আপনাকে গুগল কিওয়ার্ড প্ল্যানার ব্যবহার করতে হবে।
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর গুরুত্ব কতটুকু সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আপনি সেটা নিজেই বুঝেন। আপনার ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট কিওয়ার্ডের জন্য ভিজিটর পেতে এবং আপনার বিজনেসের ব্র্যান্ডিং এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং।
Social Media Merketing :
Social Media Merketing কে সংক্ষেপে SMM বলা হয়। ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক বড় একটা অংশ জুড়ে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর অবস্থান। প্রতিটি মানুষ, যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করে, সবাই নিজেকে সোস্যালাইজ করার জন্য বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে নিজেকে যুক্ত রাখে। তার মানে বুঝতেই পারছেন প্রতিটি বিজনেসের কাস্টমারদের ই আপনি সোস্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে খুঁজে পাবেন। এই জন্য এর মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি আপনাকে খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে।
সোস্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোতে আপনি নিয়মিত কাজ করলে খুব সহজে আপনার কোম্পানির ব্র্যান্ডিং করে ফেলতে পারবেন। এজন্য আপনাকে সবসময় আপনার অডিয়েন্সের ইন্টারেস্টের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিভিন্ন অফার, কম্পিটিশন, ইভেন্ট ইত্যাদির মাধ্যমে আপনার বিজনেসের অডিয়েন্সদের খুব সহজে এনগেইজড রাখতে পারবেন। শুধুমাত্র সোশিয়াল মিডিয়ার মাধ্যমেই নতুন একটি ব্যবসা চালু করা সম্ভব এবং অনেকেই করতেছে। এজন্য মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সোশিয়াল মিডিয়া সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ
Content Marketing :
আপনি যদি জানতে চান ডিজিটাল মার্কেটিং এর জগতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস কোনটি? তাহলে জেনে নিন, কন্টেন্ট হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। একটি ওয়েবসাইট র্যাংক করানোর জন্য কন্টেন্ট কে কিং বলা হয়। কন্টেন্ট ছাড়া একটা ওয়েবসাইট র্যাংক করানোর দ্বিতীয় কোন উপায় নেই। এইজন্য কন্টেন্ট মার্কেটিং এত গুরুত্বপূর্ণ।
ইমেজ, টেক্সট এবং ভিডিও এই তিনটি জিনিস কন্টেন্ট মার্কেটিং এ আপনাকে ব্যবহার করতে হবে। পনি যখন প্রচারণা করবেন তখন আপনাকে কনটেন্ট গুলো সঠিকভাবে, সঠিক যায়গায়, সঠিক সময়ে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার ফলাফলও সঠিকভাবে পাবেন। সুতরাং, আপনার পণ্যের প্রচারণার ক্ষেত্রে আপনার কনটেন্ট কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।
কন্টেন্ট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার বিজনেসের ব্র্যান্ডিং করতে পারবেন। বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে আপনার কন্টেন্ট গুলো র্যাংক করিয়ে নতুন কাস্টমার পেতে পারেন। আপনার ভিজিটরদের ইন্টারেস্ট এবং তারা নতুন কি চাইছে আপনার কাছে তা জানতে গুগল এনালিটিক্স এবং সার্চ কনসোল ব্যবহার করতে হবে।
Email Marketing :
ডিজিটাল মার্কেটিং এ সফল হবার জন্য ইমেইল মার্কেটিং এর উপর আপনাকে বিশেষ নজর দিতে হবে। একটু ভেবে দেখুন প্রতিদিন আপার ইনবক্সে কতগুলো ইমেইল আসে, সাথে এডও। নিশ্চয়ই খেয়াল করবেন অনেক আনওয়ান্টেড ইমেইল ও আসে, যেগুলো আপনার কাছে বিরক্তিকর এবং আপনার ইনবক্স ফুল করে ফেলে।
ইমেইল এর মাধ্যমে নিজেদের পন্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহকদের জানিয়ে দেওয়ায় হল ইমেইল মার্কেটিং।
ডিজিটাল প্রযুক্তির এই সময়ে প্রত্যেকের একটা দুইটা ইমেইল এড্রেস থাকে এবং সবাই প্রতিদিন কম-বেশি তাদের ইমেইল বক্স চেক করে। এতে আপনার পাঠানো মেইলটি চেক করে তারা নতুন পণ্য সম্পর্কে বা বিভিন্ন অফার সম্পর্কে জানতে পারবে। আপনার গ্রাহকদেরকে ইমেইল মার্কেটিং করতে বিভিন্ন ফর্ম ফিল-আপ বক্স এর মাধ্যমে তাদের ইমেইর গুলো সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
Affiliate Marketing :
এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো আপনার কোন পণ্য বা সার্ভিস অন্য কেউ বিক্রি করে দিবে, বিনিময়ে আপনি তাকে লভ্যাংশ দিবেন। এটি ডিজিটাল মার্কেটিং এর খুবই চমকপ্রদ একটি বিষয়। আপনার অনলাইন বিজনেস গ্রো করতে এফিলিয়েট মার্কেটিং অনেক বেশি হেল্প করে।
এক্ষেত্রে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং লোভনীয় হচ্ছে এমাজনের এফিলিয়েট মার্কেটিং। একটু লক্ষ করলে দেখতে পাবেন অধিকাংশ অনলাইন বিজনেসে এফিলিয়েট মার্কেটিং যুক্ত আছে। আমি আপনাকে সাজেস্ট করবো, আপনার বিজনেসে এফিলিয়েট অবশ্যই যুক্ত করুন। যতটুকু সম্ভব লভ্যাংশ শেয়ারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে আপনার বিজনেসের এফিলিয়েট লোভনীয় করে তুলুন।
PPC Advertising (Pay Per Click :
এ সম্পর্কে অল্প কিছু ধারণা পেয়েছেন সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং অংশে। PPC মানে হলো পে পার ক্লিক, অর্থাৎ প্রতি ক্লিকের জন্য আপনাকে পে করতে হবে। সার্চ এড ছাড়া আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ এড হলো ডিসপ্লে এড। এতে আপনি খুব কম খরচে অনেক বেশি মানুষের কাছে আপনার এড রিচ করাতে পারবেন। সবচেয়ে বড় যে সুবিধাটি পাবেন তা হলো আপনার বিজনেসের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের ছবি এবং ভিডিও দেখাতে পারবেন, যা আপনার অডিয়েন্সদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে আপনাকে সাহায্য করবে।
CPA Marketing (Cost Per Action) :
CPA মার্কেটিং বুঝার জন্য আপনি পিপিসি এবং এফিলিয়েটের একটা কম্বিনেশন চিন্তা করতে পারেন। একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করুন, মার্কেটিং এ আমাদের উদ্দ্যেশ্য থাকে যা আমরা ইনভেস্ট করব তার থেকে বেশি যেন আমরা রিটার্ন পাই। ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভাষায় যাকে বলা হয় ROI অর্থাৎ রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট। সিপিএ মার্কেটিং এ আপনার আরওআই সবচেয়ে বেশি হতে পারে।
ধরুন আপনি ১০০$ এ একটি জুতা বিক্রি করবেন। যে মার্কেটার সিপিএ মার্কেটিং করে আপনার জুতা বিক্রি করে দিল তাকে দিলেন ১০$, তাহলে আপনার মার্কেটিং কস্ট হলো ১০$ মার্কেটিং এর এই প্রক্রিয়া টি মূলত ব্যবহার করা হয় লিড জেনারেশনের কাজে। এখান থেকে আপনি একদম রিয়েল কাস্টমার পেতে পারেন এবং সেল জেনারেট করতে পারেন। ই-কমার্স সাইটে কোয়ালিটি ট্রাফিক ড্রাইভ করতে এটি ব্যবহার করা হয়।
আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রোমোট করার জন্য সিপিএ মার্কেটিং আপনাকে অনেক বেশি সাহায্য করবে। এর জন্য আপনাকে কোন মার্কেটিং এজেন্সি বা কোন ডিজিটাল মার্কেটার হায়ার করার প্রয়োজন হবে না। বিভিন্ন সিপিএ মার্কেটিং নেটওয়ার্কে গিয়ে আপনি অফার সাবমিট করে দিয়ে আসুন।
ডিজিটাল মার্কেটিং কেন প্রয়োজনঃ
এতক্ষণে আমরা ধাপে ধাপে যেসব ব্যাখ্যা দিয়েছি তা থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা খুব ভালো ভাবে জেনে গেছেন নিশ্চয়ই। এই হেডলাইনে আশা করি আর কোন কিছু লেখার প্রয়োজন নেই। এখন আমি আপনাকে খুব গুরুত্বপূর্ণ সাজেশন দিব। যদি আপনার অনলাইনে কোন বিজনেস থাকে তাহলে এগুলো আপনার অবশ্যই মানতে হবে।
Conclusion:
ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে এতক্ষণ যা কিছু জানলেন এর বাইরে আপনার যদি আরো কিছু জানার প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করুন। আমরা আপনার কমেন্ট সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ন করি। ডিজিটাল মার্কেটিং এ যারা নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদের জন্য পরবর্তীতে আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট থাকবে। সবসময় সঠিক ইনফরমেশন পেতে এবং ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড সম্পর্কে আপডেট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করুন আর আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।
আপনারা অনেক সময় আপনাদের বিজনেসের জন্য ডিজিটাল মার্কেটার, মার্কেটিং এজেন্সি অথবা বিভিন্ন টুলের সাহায্য নিতে চান। সেক্ষেত্রে আপনি খুব ভালোভাবে যাচাই বাছাই করে নিবেন। কখনো অটোমেটেড টেকনিকে যাবেন না। এডভার্টাইজিং বা পেইড মার্কেটিং এর থেকে বেশি গুরুত্ব দিন অর্গানিক মার্কেটিং এর দিকে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর আরো অনেক গুলো খেত্র আছে। আপনি যত বেশি পারেন আপনার বিজনেসের অনলাইন প্রেজেন্স গ্রো করুন।
0 মন্তব্যসমূহ